শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন

বাবার কথা -এইচ বি রিতা

জিনগত একটা বিষয় তো থেকেই যায়। সম্ভবত মায়ের থেকে বাবারটাই আমরা বেশি পাই। আমিও পেয়েছি।

আমার বাবার চেহারা, মোটা নাক, চওড়া কপাল, গায়ের রঙ-সবই পেয়েছি। আরো বিশেষ দুটো জিনিস যা পেয়েছি বাবার থেকে, তা হলো-শিল্পসাহিত্যের প্রতি নেশা আর ক্রোনিট ভয়ংকর রোগ।
তবে যা পাইনি এবং না পেয়ে বেঁচে গেছি, তা হলো-রাজনীতির নেশা এবং তরলপানী পানের নেশা।

জীবদ্দশায় আব্বা অসংখ্য কবিতা, গল্প, গীতি নাট্য, প্রবন্ধ, নাটক ও গান রচনা করে গেছেন বিভিন্ন আঙ্গিকে। বাবার রচিতগানের মধ্যে নূর তত্ত্ব-সৃষ্টি, নবী তত্ত্ব, সাধন তত্ত্ব, প্রেম তত্ত্ব, মুর্শিদি, দেহতত্ত্ব, আত্মতত্ত্ব, ভাবতত্ত্ব, ভক্তিমূলক, আধুনিক, বিচ্ছেদ, দেশাত্মবোধক এবং বিবিধ পর্যায় উল্লেখযোগ্য। এসব গানের ভাব এবং তত্ত্ব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল ও মহিমান্বিত। তথ্য কাব্য এবং মরমি সঙ্গীত রচনা ছিল আব্বার প্রিয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেতারের তালিকাভূক্ত গীতিকার ও সুরকার।বাবা ছিলেন রাজনীতি প্রিয় একজন মানুষ। তবু অধ্যাত্ব সাধনা ও সাহিত্যচর্চা ছিল তাঁর অন্তরের বস্তু। তাঁর চিন্তা ভাবনা ছিল লালনের চিন্তা ভাবনার অনুরুপ।

আমি অবশ্য সেসবের ধারেকাছেও নেই। আমি হলাম সস্তা লেখক। আধুনিক গদ্য-পদ্য কবিতা লিখতে গিয়ে বিষয়বস্তুর সাথে ভাবের বিন্যাস, পর্যবেক্ষণ, অনুভূতি এবং শব্দের অমোঘ বন্ধন ঘটাতে বিবিধ ছন্দের ব্যবহারের কৌশল এখনো খুঁজে ফিরি বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টে। কাব্যের রসঘন-শ্রুতিমধুর বাক্যে সুশৃঙ্খল ধ্বনিবিন্যাসে বিশেষ ধ্বনিসুষমার সৃষ্টি করতে গিয়ে ভার্টিগো বেড়ে যায় যখন তখন।
এই হলাম আমি-সাহিত্যিক পিতার অযোগ্য সন্তান।

আব্বাকে মনে পড়ে। মাত্র ৬০ বছর বেঁচে ছিলেন। তাঁর আরো কিছুদিন বেঁচে থাকা দরকার ছিল। মাঝরাতে ঘুম ভাঙিয়ে রমিজউদ্দিনের পরোটা আর খাসির রেজালা মুখে ঠেকে খাওয়ানোর সেই অত্যাচার-খুব মিস করি।

সকল বাবারা ভালো থাকুক। বাবা দিবসের শুভেচ্ছা।

এই সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




themesbazar_brekingnews1*5k
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Jp Host BD